প্রথমদিনের মতো দ্বিতীয় দিন সকালটাও ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান এনক্রুমাহ বোনার ও জশুয়া ডা সিলভার ব্যাটে ওভারপ্রতি প্রায় ৪ রান করে তুলছিল তারা। মেহেদি হাসান মিরাজের হাত ধরে প্রথম ঘণ্টায় এ জুটি ভাঙলেও, এখন গলায় কাঁটা হয়ে উঠেছে জশুয়া ডা সিলভা ও আলঝারি জোসেফের সপ্তম উইকেট জুটি।
বোনার সাজঘরে ফেরার পর দ্রুত রান তোলার দিকে পূর্ণ মনোযোগ দেন জোসেফ। তার আগ্রাসী ব্যাটেই মূলত প্রথম সেশনে একশর বেশি রান তুলে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা। দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩২৫ রান। আজকের প্রথম সেশনে খেলা ২৯ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তারা করেছে ১০২ রান।
আগেরদিন করা ৫ উইকেটে ২২৩ রান নিয়ে আজকের দিনের খেলা শুরু করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে আজ শুরু থেকেই চেপে ধরবে বাংলাদেশ- এমনটাই ছিল সকলের প্রত্যাশা। কিন্তু হয়েছে ঠিক উল্টোটা। আবু জায়েদ রাহি, তাইজুল ইসলামদের আলগা বোলিংয়ের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দিনের শুরু থেকেই সহজ রান পেয়েছেন এনক্রুমাহ বোনার ও জশুয়া ডা সিলভা।
দিনের প্রথম বলটিই পায়ে করেন রাহি। রানের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেননি হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকাবোনার, অনসাইডে ঠেলেই নিয়ে নেন তিনটি রান, স্ট্রাইক পান জশুয়া। এক বল পর রাহির ভেতরে ঢোকা বল আঘাত হানে জশুয়ার প্যাডে। আম্পায়ার সৈকত আউট দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নিয়েও সফল হয়নি। ঠিক পরের বলেই পয়েন্টে দুর্দান্ত বাউন্ডারি হাঁকান জশুয়া।
প্রথম ওভারেই পাওয়া এ আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিকে আরও দৃঢ় করছেন জশুয়া ও বোনার। শুরুর দিকে উইকেট না পাওয়ায় দিনের সাত ওভার পর একসঙ্গে রাহি ও তাইজুলকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে দেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। দুই প্রান্ত থেকে দুই অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসানকে আনা হয় জুটি ভাঙতে। এই পরিকল্পনায় মেলে সাফল্য।
বল হাতে নিয়ে দিনে নিজের প্রথম ওভারেই জশুয়ার কঠিন পরীক্ষা নেন মিরাজ। অন্তত দুইটি ডেলিভারিতে শার্প টার্নের দেখা মেলে। অন্যপ্রান্তে নাঈমও রান আটকে রেখে চাপ সৃষ্টি করেন দুই ব্যাটসম্যানের ওপর। যার ফল মেলে দিনের ১২তম ওভারে গিয়ে। নিজের টেস্ট ক্যারিয়ারের ৯৯তম উইকেট তুলে নেন মিরাজ।
উইকেট থেকে সাহায্যের আশায় রাউন্ড দ্য উইকেটে বোলিং করেন মিরাজ। সিলি পয়েন্ট না রেখে লেগ স্লিপে দাঁড় করান মোহাম্মদ মিঠুনকে। তার লেগস্ট্যাম্পে পিচ করা ডেলিভারিটি ফাইন লেগে ঠেলে দেয়ার চেষ্টায় লেগ স্লিপেই ধরা পড়েন ৭৪ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করা বোনার। আজ তিনি ব্যক্তিগত সংগ্রহে যোগ করতে পেরেছেন ১৬ রান। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও ২০৯ বলে ৯০ রানে থামেন বোনার, ভেঙে যায় ৮৮ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।
এই জুটি ভেঙেও অবশ্য স্বস্তি পায়নি বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় আরও দ্রুত রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করে ফিফটিতে পৌছান জশুয়া। উইকেটে এসে শুরু থেকেই চার-ছক্কায় মনোযোগ দেন জোসেফ। মিরাজ, নাঈম বা তাইজুল- কোনো স্পিনারকেই বাড়তি সমীহ করেননি জোসেফ। প্রতিটি বাজে বলের ঠিকানাই করেছেন সীমানার বাইরে।
প্রথম শেষ হওয়ার আগে অবিচ্ছিন্ন সপ্তম উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ করেছেন জশুয়া ও জোসেফ। যেখানে ৫ চার ও ২ ছয়ের মারে জোসেফের একার অবদান ৩৪ রান। অন্যদিকে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংসে ৭০ রানে অপরাজিত রয়েছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জশুয়া। দ্বিতীয় সেশনে দলীয় সংগ্রহটা আরও বড় করতে তাদের ব্যাটেই তাকিয়ে থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।