ঢাকার উত্তরায় সম্প্রতি দম্পতির ওপর হামলার ঘটনায় নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে। মেহেবুল হাসান ও নাসরিন আক্তার ইপ্তিকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচিত করা হলেও, তাদের মধ্যে কোনো বৈধ সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন শম্পা নামের এক নারী, যিনি নিজেকে মেহেবুল হাসানের প্রকৃত স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন।
শম্পা গণমাধ্যমে জানান, ‘মেহেবুল হাসান আমার বৈধ স্বামী। নাসরিন আক্তার ইপ্তির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।’ তিনি আরও দাবি করেন, এই ব্যাপারে তার কাছে প্রমাণ রয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক লাইভ সম্প্রচারে শম্পা বলেন, তিনি এবং নাসরিন আক্তার ইপ্তি দুজনেই মেহেবুল হাসানের সহকর্মী। ২০১৬ সালে মেহেবুলের সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং তাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে, যাদের বয়স ৫ ও ৪ বছর। লাইভ চলাকালীন শম্পা তার দুই কন্যাসন্তানকেও সবার সামনে নিয়ে আসেন।
শম্পা অভিযোগ করেন, তার স্বামীর সঙ্গে নাসরিন আক্তারের পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে, তবে তাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়েছে কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন। এছাড়া, মিডিয়ার সামনে নিজের পরিচয় প্রকাশ করায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মেহেবুল হাসান ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করেন। ঘটনার দিন সকালে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে যান। শম্পা জানান, সাধারণত স্বামী বাসার বাইরে থাকলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন না, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সংবাদ দেখে হামলার বিষয়টি জানতে পারেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শম্পা বলেন, তিনি জানেন না কেন তার স্বামীর ওপর উত্তরায় হামলা হয়েছে বা তিনি সে রাতে সেখানে কেন গিয়েছিলেন। লাইভ চলাকালীন হঠাৎ মেহেবুল হাসান তার মোবাইলে কল দিয়ে রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন, ‘তুই মিডিয়াতে থাক, মিডিয়াতে তুই বউ হয়ে আয়।’
এ সময় মেহেবুলের মা, অর্থাৎ শম্পার শাশুড়িও ফোনে কথা বলেন, তবে তিনি কী বলেছেন তা স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
এই ঘটনায় এখনও নাসরিন আক্তার ইপ্তি বা মেহেবুল হাসানের আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে শম্পার অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে সোমবার রাতে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডে একটি মোটরসাইকেল রিকশাকে ধাক্কা দেয়, যেখানে মেহেবুল ও নাসরিন প্রতিবাদ জানান। এরপর রিকশায় ধাক্কা দেওয়ার পর বাইক আরোহীরা তাদের হুমকি দিয়ে এক পর্যায়ে মারধর শুরু করে এবং পরে অস্ত্রসহ আরও কয়েকজন এসে তাদের ওপর হামলা চালায়।
এই হামলার পর জনতা হামলাকারীদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। ভুক্তভোগী নাসরিন আক্তার ইপ্তি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করেন এবং পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে।