ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ইভ্যালির বিরুদ্ধে ৩৩৮ কোটি টাকা আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধানে নামার সাড়ে তিন মাসের মাথায় তদন্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক বলছে, ইভ্যালিসহ ই-কর্মাস কমিশনের ‘তফসিলভুক্ত’ নয়। তাই এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান এ সংস্থাটি করবে না। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুদক প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান কমিশন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ।
ইভ্যালিসহ ই-কমার্স খাত সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগের অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ই-কমার্স বা ইভ্যালির বিষয়টি দুদকের শিডিউলভুক্ত নয়। মানি লন্ডারিংয়ের কথা যখন হয়েছিল তখন আমরা অনুসন্ধানে নেমেছিলাম। এখন মানিলন্ডারিংসহ ইভ্যালির বিষয়টি অন্য সংস্থা দেখবে।’
এটি গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়। এজন্য পুলিশ ও সিআইডি দেখবে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইভ্যালির বিষয়ে গ্রাহক ও মার্চেন্টের ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা আত্মসাত ও পাচারের অভিযোগ পেয়ে গত ৮ জুলাই থেকে অনুসন্ধানে নামে দুদক। এরপর দিন ৯ জুলাই ই-ভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রীর প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চায় দুদক। এরপর ১৫ জুলাই তাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আদেশ দেয় আদালত। দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও উপসহকারী পরিচালক মুহাম্মদ শিহাব সালামকে এই অনুসন্ধানের কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।
এর আগে, দুদককে দেওয়া এক চিঠিতে ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের চিঠির সঙ্গে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাত পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদনও যুক্ত করে দেওয়া হয়।
দুদকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘ইভ্যালি ডটকমের চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহকের পণ্য সরবরাহ বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকিদের পাওনা পরিশোধ করা কম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়। গ্রাহক ও মার্চেন্টের নিকট থেকে প্রাপ্ত ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ ১৮ হাজার ১৭৮ টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ টাকা আত্মসাত কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।’
প্রতারণার অভিযোগে এক গ্রাহকের করা গুলশান থানার এক মামলায় ১৬ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোছা. শামীমা নাসরিনকে তাদের রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।