পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পাচারের সময় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১২৭ মণ (৮৫ বস্তা) চাল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশে শ্মশান ঘাট এলাকা থেকে এই চাল উদ্ধার করে পুলিশ। দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার ঘোষ ও মেম্বাররা ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) কার্ডের এই চাল বিক্রি করেছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তবে ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষের দাবি, ভিজিডি কার্ডধারী নারীরা নিজেরাই এই চাল বিক্রি করেছেন। পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত কিংবা আটক করতে পারেনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দিলপাশার ইউনিয়নে ২০২১/২২ চক্রে ৩২৬ জন দুস্থ নারীকে ভিজিডি কার্ডের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। ফেব্রুয়ারি মাসের চাল বিতরণের জন্য গত চার-পাঁচ দিন আগে উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে চাল নিয়ে এসে ইউনিয়ন পরিষদের স্টোর রুমে রাখা হয়। এরপর গত বুধ ও বৃহস্পতিবার অনেককে চাল দেয়া হয়। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বিকালে ইউনিয়ন পরিষদের স্টোর রুম থেকে বস্তা পাল্টিয়ে ৮৫ (৬০ কেজি) বস্তা চাল একটি হাইড্রোলিক ট্রলিতে করে রওনা দিলে গ্রামের বাসিন্দারা বাধা দেয়। এসময় গ্রামবাসী ট্রলিচালককে চালের মালিক সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে হাইড্রোলিকের সাহায্যে ট্রলি থেকে মুহূর্তেই চাল ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাযন। বিষয়টি গ্রামবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়। কিন্তু চালের মালিক খুঁজে না পাওয়ায় বস্তাগুলো ইউনিয়ন পরিষদের একটি রুম সিলগালা করে রাখা হয়।
তবে গ্রামবাসীর অভিযোগ, মাগুড়া গ্রামের বাসিন্দা খোকন ও হাটউধুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাবুল আক্তার ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ ও মেম্বারদের কাছ থেকে এই চাল ক্রয় করে খোলা বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ট্রলিচালককে দিয়ে পাচার করছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন, এর আগেও দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কর্মসূচির চাল আটকের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এরপরেও অভিযুক্তদের শনাক্ত করে শাস্তি না দেওয়ায় বারবার এমন ঘটনা ঘটছে।
অভিযোগের বিষয়ে দিলপাশার ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ বলেন, ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ নারীরা একসাথে হয়ে চাল ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছিলেন। সেই চাল ক্রয় করে নিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসীর বাধার মুখে ট্রলিচালক চাল ফেলে পালিয়ে যাযন।
সহকারী কমিশনার ভূমি কাওসার হাবিব বলেন, চালের মালিক না পাওয়ায় তা উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদের একটি রুমে সিলগালা করে রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, তদন্ত করে ভিজিডির চালের সত্যতা প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।