1. [email protected] : দেশ রিপোর্ট : দেশ রিপোর্ট
  2. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  3. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৮ অপরাহ্ন

আইভীর কাছে সাগর-রুনী-তনু হত্যাকাণ্ডের তথ্য চাইলেন তৈমুর

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

নিহত সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনী ও কলেজছাত্রী তনু হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জনসম্মুখে তথ্য প্রকাশ করতে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে অনুরোধ করেছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার।

তিনি বলেছেন, সাগর-রুনী ও তনু হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত আপনি জানেন বলে বক্তব্য দিয়েছিলেন, যার রেকর্ড আমাদের কাছে আছে। জানা থাকলে সেটা জনসম্মুখে প্রকাশ করলে জনগণ আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে।

একই সঙ্গে ডা. আইভী নীতিগতভাবে আওয়ামী লীগ করার অধিকার রাখেন কিনা প্রশ্ন রেখে তৈমুর খন্দকার বলেছেন, ডা. আইভী নিজেই বলেছেন ‘দুই নেত্রী দেশকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গডফাদাররা খুন করে বেড়াচ্ছে, বর্তমান সরকার খুনিদের পৃষ্ঠপোষক, আওয়ামী লীগ মনে করে ৬৪ জেলায় ৬৪ জন গডফাদার থাকলেই তাদের কাজ হয়ে যাব’— যার পেপার কাটিং রয়েছে। তাহলে যে দল গডফাদার, খুনি লালন করে সেই দল আপনি (আইভী) করেন কেন?

তিনি আরও বলেন, পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশনের ১৮ বছরে সততার বুলি আওড়িয়ে কি করে একজন রাজপ্রাসাদ গড়ে তুলতে পারেন। আর যেসব সাংবাদিক নাসিক পরিচালনায় মেয়রের ব্যর্থতা পত্র-পত্রিকায় তুলে ধরেছেন তাদের অনেককেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার শিকার হয়েছেন এবং কারাগারে যেতে হয়েছে।

রোববার বিকালে নিজ বাসভবনের ‘মজলুম মিলনায়তন’ এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আল খন্দকার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ২০১১ সালের নির্বাচনে ডা. আইভীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সাবেক এমপি এসএম আকরাম, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, জেলা বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন কালু, আব্দুস সবুর সেন্টু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম জুয়েল, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি এসএম আসলাম প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আজকের এ সংবাদ সম্মেলনটি আমার জন্য অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সরকারদলীয় প্রার্থী একের পর এক আচরণবিধি ভঙ্গ করলেও নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র শোকজ করার নামে আইওয়াশ করেছে।

তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় এসে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলে গেছেন- তৈমুরকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না। নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে আমার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় কর্মী-সমর্থকদের পরোক্ষভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। সর্বোপরি গত ৮ জানুয়ারি সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী আমাকে নিয়ে তার নিজ দলের একজন এমপি ও জাতীয় পার্টির একজন এমপিকে জড়িয়ে যে রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য করেছেন সে ব্যাপারে কিছু না বললেই নয়।

তৈমুর আলম বলেন, সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী যে রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য করেছেন, সে ব্যাপারে আমার স্পষ্ট মন্তব্য হলো সরকারদলীয় নেতাদের এই বিভেদ-বিভাজনই নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের প্রধান অন্তরায়। শামীম ওসমান সরকারদলীয় এমপি আর সেলিম ওসমান সরকারি দলের জোটবদ্ধ জাতীয় পার্টির এমপি। আমি তৈমুর আলম খন্দকার প্রথম দিন থেকেই বলছি শামীম ওসমানের পায়ে তৈমুর আলম খন্দকার হাঁটে না। গত ৫০ বছর ধরে মাটি ও মানুষের সঙ্গে রাজনীতি করতে করতে তৈমুর আলম খন্দকারের ভিত্তি এতটাই শক্ত অবস্থান হয়েছে যে, কোনো শামীম ওসমান বা সেলিম ওসমানের হয়ে আমাকে নির্বাচনে অভিনয়ে নামতে হবে না।

তৈমুর তার লিখিত বক্তব্যে সাবেক মেয়র আইভী প্রসঙ্গে বলেন, শত শত বছর ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নগর এই নারায়ণগঞ্জ। অথচ সরকারদলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মসজিদ ও মন্দিরের জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। ওয়াকফাকৃত সম্পত্তি বা দেবোত্তর সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর যোগ্য না হলেও শত বছরের প্রাচীন দেওভোগ লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের সম্পত্তি কি করে আপনার পরিবারের নামে কি করে হলো? একইসঙ্গে প্রায় সাড়ে ৫শ বছরের প্রাচীন মুঘলীয় মসজিদ তথা জিমখানা মসজিদের জায়গাও তিনি দখল করেছেন বলে ওই মসজিদ কমিটি ও ওয়াকফ এস্টেটের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে।

তিনি বলেন, অর্ধশত বছর ধরে রেলওয়ে কলোনিতে বসবাসকারী প্রায় অর্ধশত পরিবারসহ জিমখানা বস্তির প্রায় ৫ হাজার মানুষের মাথার ছাদ কেড়ে নিয়েছেন। পুনর্বাসন না করে একদিকে যেমন ছিন্নমূল মানুষকে গৃহহীন করা হয়েছে, পার্কের নামে ঠিকাদার সিন্ডিকেটকে কোটি কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতে মামলা, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা স্বত্বেও ঐতিহ্যবাহী রহমত উল্লাহ মুসলিম ইনস্টিটিউট ভবনটি দিবালোকে বিনা নোটিশে ভেঙ্গে দিয়েছেন। শতাধিক ব্যবসায়ী আজ পথে পথে জীবিকার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ ফুটপাত দখল করে পাঠাগার বিল্ডিং বানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ লেক উন্নয়নের নামে পুরো সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অন্ধকারের অতল গহবরে নিমজ্জিত করা হয়েছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এমআরটি (মাস র্যা পিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট) প্রকল্প বাস্তবায়নে বিষয় জানিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরসহ ঢাকা পরিবহণ সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) নাসিককে একাধিকবার অনুরোধপত্র দিলেও রীতিমতো দখল করে সেই জায়গায় সৌন্দর্য বর্ধনের নামে দখলদারিত্ব বজায় রাখা হয়েছে। এতে সিদ্ধিরগঞ্জ-আদমজী পুরাতন সড়কটি ভবিষ্যতে আর কোন হাইওয়ে এক্সপ্রেসের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না যা সিদ্ধিরগঞ্জবাসীকে চিরতরে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বিরত করছে।

তৈমুর বলেন, একটি সিটি করপোরেশনের নাগরিকদের প্রতি সেই করপোরেশনের প্রধান দায়িত্ব হলো সবুজায়ন, যানজট মুক্ত শহর, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশবান্ধব একটি পরিচ্ছন্ন নগর উপহার দেওয়া। অথচ পৌর আমল থেকে সিটি করপোরেশনের ১৮ বছর ক্ষমতাকালে নারায়ণগঞ্জের ময়লা ব্যবস্থাপনা করতে ব্যর্থ হয়েছেন আপনি। দেশের একমাত্র ডাস্টবিনহীন শহর এই নারায়ণগঞ্জ। বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও শহর, এই ৩ এলাকায় ২৭টি ওয়ার্ডে ময়লার ভাগাড় ছাড়া আর কিছুই নেই।

তিনি বলেন, শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠা এই শহরে এখনও ৫ মিনিটের বৃষ্টিতে বন্যা হয়ে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থার নামে জনগণের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন, শহরের আর বন্দরের প্রায় অর্ধশত খালগুলোকে ভরাট করে জলাশয় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন। প্রতি বছর বাজেটে মশা মারতে আপনি জনগণের কোটি কোটি টাকা দিয়ে কামান কিনেন। কিন্তু এরপরও কাউন্সিলরদের নিজেদের টাকায় মশা মারার যন্ত্রপাতি কিনতে হয়।

তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহর এখন যানজটের নগরী। যানজটের কথা উঠলেই আপনি বলেন সেটা ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের কাজ। যানজট নিরসন আপনার কাজ না। অথচ শত শত কোটি টাকায় ফ্ল্যাট আর দোকান বানিয়ে বাণিজ্য না করে কিছু টাকা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবী বা কমিউনিটি পুলিশ রাখলে শহরকে যানজট মুক্ত করা যেত। করোনা মহামারীকালে যেখানে প্রায় ২ বছরে পুরো দেশ বিপর্যস্ত, সরকারের বহু প্রতিষ্ঠান কর মওকুফ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল, বাড়িওয়ালারা ভাড়াটিয়ার ভাড়া মওকুফ করে দিয়েছে সেখানে আপনি সারা দেশের সব সিটি করপোরেশনের চেয়ে বেশি ট্যাক্সের বোঝা মানুষের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছেন। আপনি প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেন অথচ করোনাকালে আপনি একজন চিকিৎসক হয়ে না দাঁড়িয়েছেন মানুষের পাশে, না সিটি করপোরেশনের তহবিল থেকে মানুষের সাহায্য করেছেন।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৩ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব