ক্যাপিটল ভবনে হামলায় সমর্থকদের উসকানি দেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে কোনো অনুশোচনাবোধ নেই। উল্টো তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ওই হামলার জেরে তাঁকে অভিশংসন করা হলে আরও সহিংসতা হতে পারে।
৬ জানুয়ারির সহিংস ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার প্রথম জনসমক্ষে দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাম্প এসব কথা বলেন। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
টেক্সাসে সীমান্তদেয়াল পরিদর্শনে যাওয়ার পথে ট্রাম্প সাংবাদিকদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত কথা বলেন। এ সময় ট্রাম্পের কথায় কোনো অনুশোচনা বা অপরাধবোধ ছিল না।
৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের আহ্বানে তাঁর উগ্র সমর্থকেরা রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জড়ো হন। একপর্যায়ে তাঁরা কংগ্রেস ভবনে হামলা চালান। এ হামলার ঘটনায় পাঁচ ব্যক্তি নিহত হন। ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও কংগ্রেসের সদস্যদের জীবনও হুমকির মুখে পড়েছিল।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। এই রক্তক্ষয়ী ঘটনার জন্য ট্রাম্পের উসকানিকে দায়ী করা হলেও তিনি যথারীতি নির্বিকার। তাঁর মধ্যে নেই কোনো দুঃখবোধ।
ট্রাম্পের ভাষ্য, ক্যাপিটলে জড়ো হতে সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর দেওয়া বক্তব্য পুরোপুরি ঠিক ছিল। লোকজন তাঁর বক্তৃতা বিশ্লেষণ করে এমনটাই নাকি জানিয়েছে।
যদিও ট্রাম্পের নিজ দলের নেতারাই তাঁর বক্তব্যকে উসকানিমূলক হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ক্যাপিটলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পকে অভিশংসনের উদ্যোগ নিয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা। মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর আজ বুধবার ভোট হতে পারে।
হামলার ঘটনায় প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনে ডেমোক্র্যাটদের উদ্যোগের বিষয়ে ট্রাম্প সতর্ক করেছেন।
ট্রাম্প এই অভিশংসনের উদ্যোগকে ধাপ্পাবাজি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ‘উইচ-হান্ট’ এই অভিশংসন।
ট্রাম্প নিজেকে শান্তিপ্রিয় মানুষ দাবি করেন। তিনি বলেন, তাঁকে অভিশংসনের উদ্যোগ ব্যাপক ক্ষোভ ও বিভক্তির জন্ম দিচ্ছে। একে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভয়ানক হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।
ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী কার্যকরে ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতারা। তাঁদের সঙ্গে রিপাবলিকান পার্টির কিছু নেতাও আছেন। তবে ট্রাম্প এই আহ্বানের ক্ষেত্রে তাঁর নিজের কোনো ঝুঁকি দেখছেন না। এই আহ্বান যাঁরা জানাচ্ছেন, তাঁদের তিনি বুমেরাংয়ের বিষয়ে সতর্ক করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০ জানুয়ারি শপথ নেবেন। এদিন ট্রাম্পের সমর্থকেরা আবার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারেন বলে সতর্ক করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। সংস্থাটি বলেছে, ২০ জানুয়ারি দেশের ৫০টি অঙ্গরাজ্যেই সশস্ত্র বিক্ষোভের আশঙ্কা রয়েছে।
বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নামানো হচ্ছে ন্যাশনাল গার্ডের ১৫ হাজার সদস্য।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। এই জরুরি অবস্থা ১১ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।