নিত্য পণ্যের উচ্চমূল্য, বাসা ভাড়াসহ যেখানে সরসার চালাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সেখানে অনন্য নজির স্থাপন করলেন রাজধানীর মিরপুর এলাকার রুপালি হাউজিংয়ের এক বাড়িওয়ালা। ঈদ উপলক্ষে বাড়াটিয়াদের বাসা ভাড়া সম্পূর্ণ মওকুফ করেছেন তিনি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাড়িয়ে পড়েছে এমন একটি পোস্ট।
রুপালি হাউজিংয়ের ৬১ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকেন আলিমুর রহমান সুফাল। সোমবার (১ এপ্রিল) তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি জানালে মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয় পোস্টটি।
বাড়িওয়ালা থেকে পাঠানো চিঠিটি তার আইডিতে শেয়ার করে লেখেন, আমার বাড়ি ওয়ালার পক্ষ থেকে ঈদ উপহার….আমি আমার ঢাকা শহরের এই ছোট্ট জীবনে কেউ কখনো এমন উপহার পেয়েছেন কিনা জানি না এবং শুনিনি কখনো, আমি অন্তত পাইনি। সম্পদের পাশাপাশি সুন্দর একটা আত্মা থাকা টা ও জরুরি একজন প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য। আল্লাহ উনাকে নেক হায়াত এবং দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
আলিমুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি কালবেলাকে বলেন, আমি একজন ভাড়াটিয়া হিসেবে আমার আবেগ প্রকাশ করেছি মাত্র।
এদিকে বাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি বিষয়টি গোপন রাখতেই পছন্দ করেন বলে জানিয়েছেন।
জানা যায়, এই বাড়িওয়ালার এই হাউজিংয়ে দুইটা বাড়ি আছে এবং সবার জন্যই এই উপহার দিয়েছেন।
আলিমুর রহমানের করা সেই পোস্টের কেমেন্টসে বাড়িওয়ালার জন্য প্রশংসার জোয়ার বয়ে গেলেও অনেকেই অন্য বাড়ির মালিকদের নিয়ে নিজেদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান।
নাজমুল হাসান নামে একজন লিখেন ‘আলহামদুলিল্লাহ। এরকম কখনো শুনি নাই ভাই। ওনার জন্য দোয়া রইল।’
মো. মঞ্জুর মুর্শেদ নামে একজন লেখেন, কোথায় এই হাউজিং ? বাসা কি আর খালি আছে?
হিমা রুজারিও নামে একজন মন্তব্য করে বলেন, ‘ঈশ্বর উনার এবং উনার পরিবারের মঙ্গল করুন।ভাইয়া পোস্টটা কি শেয়ার দিতে পারি?কারণ এমন দৃষ্টান্ত সহজে দেখা যায় না।’
অন্তু মুজাহিদ নামে একজন পোস্টটি শেয়ার করে তার টাইমলাইনে লেখেন, ‘হে আল্লাহ, রাজধানীর সকল বাড়িওয়ালাকে রাতারাতি নিচের এই বাড়িওয়ালার মতো দারাজ দিলের মালিক বানিয়ে দাও।’
সিজ্জিল মমতাজ নামে একজন আক্ষেপ প্রকাশ করে লেখেন, ‘ঢাকা শহরের বাড়িওয়ালারা ভাড়াটিয়াকে মানুষ মনে করে না। দুই বছর পর পর ভাড়া বাড়ায়। ৫ তারিখের মধ্যে ভাড়া সার্ভিস চার্জ না দিলে পাঁচবার লোক পাঠায়। ৯৯ ভাগ অমানুষের মধ্যে একজন মানুষ আছে বলে এখনো পৃথিবীটা সুন্দর।’