1. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. [email protected] : Maharaj Hossain : Maharaj Hossain
  3. [email protected] : Rajib Ahmed : Rajib Ahmed
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
প্রবাসে বাংলাদেশি: সাংস্কৃতিক ক্ষুদ্রতা ছাপিয়ে সাফল্য দেখছেন নোবেলের জন্য রুহুল আবিদ - Dainik Deshbani
বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন

প্রবাসে বাংলাদেশি: সাংস্কৃতিক ক্ষুদ্রতা ছাপিয়ে সাফল্য দেখছেন নোবেলের জন্য রুহুল আবিদ

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • বুধবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২০

এই মুহূর্তে প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় যিনি রয়েছেন তিনি আর কেউ নন- ড. রুহুল আবিদ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাধারণ জনগণ বিশেষ করে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেয়া তার উদ্যোগের জন্য আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় তাকে মনোনীত করেছে এ’বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য, যা বাংলাদেশিদের জন্য এক বিশাল গর্বের বিষয়।

পেশায় চিকিৎসক রুহুল আবিদ পিএইচডি করেছেন জাপান থেকে। সেখান থেকে চলে আসেন আমেরিকায়। বহুদিন পড়িয়েছেন, পাশাপাশি গবেষণা করেছেন পৃথিবীর অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডে।

বাংলাদেশের ডাক্তাররা সাধারণত উন্নত বিশ্বে পাড়ি জমাতে চান না কারণ তাদের জন্য এই পথ তুলনামূলক ভাবে অন্য পেশাজীবীদের থেকে অনেক কঠিন। কিন্তু আশির দশকের এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের তুখোড় ছাত্রনেতা জানতেন তিনি সমাজকে কতটা দিতে পারেন। আর সেটা দেয়ার জন্য তার প্রয়োজন ছিল বৈশ্বিক মঞ্চ।

যেই প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদ উন্নত বিশ্বে আমাদের গতির পথে বাধা বলে মনে করি – সেই বর্ণবাদ আদতে বাংলাদেশেই বিদ্যমান এবং তা গভীরভাবে। সমস্যা হল বর্ণবাদ বিষয়টি কী, সেই বিষয়েই দেশে বাঙালিরা অবগত না। এই প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল রুহুল আবিদের সঙ্গে।

”আমাদের একটি বড় সমস্যা হল আমাদের মানুষকে মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করতে শেখানো হয় না। আমাদের সমাজে শ্রেণি বৈষম্য প্রকটভাবে বিদ্যমান,” তিনি বলেন।

ড. আবিদ বলেন, তাঁর জীবনের ‘মোড় ঘুরে যায়’ যখন এমবিবিএস পাশের পর তিনি চা বাগানে চাকরি করতে যান।

”আমি খুবই অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম- হাম থেকে মৃত্যুর হার সেখানে অনেক বেশি। অথচ সেটিকে সবাই অতিপ্রাকৃত শক্তিতে অপমৃত্যু বলে মনে করে। তখন আমি উদ্যোগ নেই মানুষকে সচেতন করার, টিকা নেয়ার।

”তাদের বোঝানোর বিষয়টি সহজ ছিল না। কিন্তু বোঝার পর যে আবেগ আর ভালোবাসা তারা ফিরিয়ে দিলো- তা আমার জীবনের চিন্তা ভাবনাকে আমূল পাল্টে দিল,” তিনি বলেন।

উন্নত বিশ্বে সাধারণত উচ্চ শিক্ষিতরাই পাড়ি জমিয়েছেন, না হলেও সেই দেশের পরিবেশে, জীবনধারার সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়েছে। কিন্তু এই বড় পরিসরে এসে যেখানে মন মানসিকতা ও চিন্তা ভাবনার বিস্তৃতি হওয়ার কথা, বাস্তবে ঠিক তার উল্টোই দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে ড. আবিদ দায়ী করেন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে।

”আমাদের দেশে বিজ্ঞান বা বাণিজ্য শিক্ষার পাশাপাশি শিল্প, সাহিত্য নিয়ে শিক্ষা দেয়া হয় না। ফলে আমাদের মননের বিস্তৃতি ঘটে না। প্রশ্ন করতে শেখানো হয় না।

”বিদেশে এসেও নিজেদের ধরে রাখতে সাংস্কৃতিক চর্চা করা হয় না। গান, নাচ, কবিতা শিখতে যাওয়া বা দেখতে যাওয়ার চাইতে ধর্ম চর্চা করা অনেক সহজ। ফলে একটা সময়ের পর বহু মানুষকে ধার্মিক, পরবর্তীতে মৌলবাদী মন মানসিকতার হতে দেখা যায়,” তিনি বলেন।

এর সাথে যোগ করে তিনি নিজের উদাহরণ দেন, কীভাবে জাপানের মতো রক্ষণশীল সমাজে গিয়েও তিনি সক্ষম হয়েছিলেন বন্ধুত্ব করতে। মানুষ শুরুতে বিরূপ আচরণ করতেই পারে। কিন্তু নতুন দেশে এসে সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারা যে কোনো প্রবাসীর দায়িত্ব।

উন্নত বিশ্বে জীবন যাত্রায় বিনোদনের বা সুস্থ জীবনধারার জন্য শত উপায় থাকলেও, বাঙালিরা যেন নির্দিষ্ট দলের মাঝে ঘুরে ঘুরে দাওয়াত আয়োজনের মধ্যেই সকল আনন্দ খুঁজে পান। তিনি বলেন এভাবে প্রবাসী বাঙালিরা একটি ‘আমিষ সমাজে’ পরিণত হতে চলেছে (আমিষরা আমেরিকার একটি ক্ষুদ্র ইউরোপীয় বংশোদ্ভূত জনগোষ্ঠী যারা নিজেদের সমাজেই থাকতে এবং অন্য সব জাতি থেকে নিজেদের দূরে রাখায় বিশ্বাস করে)।

”নিজেদের মধ্যেই জগতকে খুঁজতে গেলে ক্যারিয়ারে অন্যতম উচ্চতায় কখনোই যাওয়া সম্ভব না। কারণ ক্যারিয়ারের সুযোগ, সম্পর্কের মাধ্যমেই আসে। আর তার জন্য ভিনদেশীদের সঙ্গেও সমান্তরাল সামাজিক সম্পর্ক থাকতে হবে,” তিনি বলেন।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৫ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব