1. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. [email protected] : Rajib Ahmed : Rajib Ahmed
  3. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
টিউলিপকে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার চাপ বিরোধীদের - Dainik Deshbani
মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০১ অপরাহ্ন

টিউলিপকে ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখার চাপ বিরোধীদের

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত এমপি ও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি। বাংলাদেশের একটি পারমাণবিক (রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র) বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে তার এবং তার পরিবারে বিরুদ্ধে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠার পর কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষ থেকে এই চাপ প্রয়োগ করা হলো।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি রোসাটম। টিউলিপের দায়িত্বে থাকা ব্রিটিশ সরকারের অংশ অফিস ফর ফিন্যান্সিয়াল স্যাংকশনস ইমপ্লিমেন্টেশন ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রোসাটমের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর অন্তত ৪৫টি আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা ঠিকঠাক কার্যকর হচ্ছে কি না এবং কার্যকর না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা নিয়মিত পর্যালোচনা করতে হয় হ্যাম্পস্টেড থেকে নির্বাচিত লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে। অথচ এই কাজ করার সময়েই তার বিরুদ্ধে সেই রোটাসমের প্রকল্প থেকেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠল। গত শনিবার রাতে টোরি তথা কনজারভেটিভ পার্টির স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র ম্যাট ভিকার্স বলেন, ‘কিয়ার স্টারমারকে (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা) নিশ্চিত করতে হবে যে, টিউলিপের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রশ্ন থাকা পর্যন্ত তাকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও দুর্নীতি-বিরোধী নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।’

এর আগে যুক্তরাজ্যে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দেশটির মন্ত্রিসভার কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার ন্যায় ও নৈতিকতা দল এই অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

কিছুদিন আগে, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক টিউলিপ সিদ্দিক (৪২), তার মা শেখ রেহানা (৬৯) এবং খালা শেখ হাসিনার (৭৭) বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে এই তদন্ত শুরু করে দুদক। আদালতে দাবি করা হয়, টিউলিপ এবং তার পরিবারের সদস্যরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ভুয়া কোম্পানি এবং মালয়েশিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরিয়ে নিয়েছেন।

ডেইলি মেইল এই খবরটি প্রকাশের পর লেবার পার্টির নেতারা অভিযোগগুলোকে ‘অমূলক’ বলে অভিহিত করেন এবং জানান, টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন। তারা আরও জানান, এখন পর্যন্ত কোনো কর্তৃপক্ষ টিউলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

বে বাংলাদেশের দুদকের কর্মকর্তারা ডেইলি মেইলকে জানান, পাঁচ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল বর্তমানে টিউলিপ সিদ্দিক এবং অন্যদের দুর্নীতির বিষয়ে সম্পর্কিত ‘দলিল-প্রমাণ’ সংগ্রহ করছেন এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অভিযুক্তদের প্রতিক্রিয়া জানতে চিঠি পাঠানোর সম্ভাবনা আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুদক এই চিঠি ঢাকায় অবস্থিত ব্রিটিশ হাইকমিশনের মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে পাঠাতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা আরও বলেন, তারা প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর তদন্তকারীরা আদালতে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এফআইআরে আনুষ্ঠানিকভাবে টিউলিপ সিদ্দিককে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করবে এবং তাকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা প্রদান করবে বাংলাদেশি পুলিশকে।

দুদকের অপর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘তদন্তটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। তদন্ত শেষ হলে আমরা সবার কাছে চিঠি পাঠাব। তাকে (টিউলিপ) জবাব দেওয়ার জন্য ডাকা হবে।’ দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন জানান, এই চিঠি টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিজেদের পক্ষে সাফাই দেওয়ার সুযোগ দেবে।

যদি টিউলিপ সিদ্দিক সহযোগিতা না করেন, তবে তিনি হাসিনার সরকারের সদস্যদের চুরি করা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সাম্প্রতিক প্রতিশ্রুতি ক্ষুণ্ন করবেন। এর আগে, গত অক্টোবরে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির তদন্তকারীরা দুর্নীতি দমন তদন্তগুলোতে ‘সহায়তা’ করার জন্য বাংলাদেশ সফর করেন। সম্প্রতি বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এক এমপি পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনারকে লিখিতভাবে মিসেস সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চালানোর অনুরোধ করেছেন। তবে লেবার পার্টি বলেছে, ‘টিউলিপের সঙ্গে এই বিষয়ে কেউ যোগাযোগ করেনি এবং তিনি অভিযোগগুলো পুরোপুরি অস্বীকার করেন।’

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৪ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব