ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আর যেন সহ্য করতে পারছিলেন না। তার দেশকে নিয়ে যে ছেলেখেলা খেলছে যুক্তরাষ্ট্র তা হারে হারে টের পাচ্ছেন তিনি। তাইতো মেজাজ হারিয়ে ফেললেন ট্রাম্পের সামনেই। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সামনে বসে চোখে চোখ রেখে এভাবে কথা বলার সাহস দেখায়নি কেউ। শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্টই নয়, স্মরণকালে সামনাসামনি দুই বিশ্বনেতার এমন বাগ্বিতণ্ডা বিরলই বটে।
বাইডেন প্রশাসন যে ইউক্রেনকে পুতিনের মতো বাঘের সামনে ঠেলে দিয়ে কত বড় বিপদে ফেলেছে তা এখন হারে হারে টের পাচ্ছেন ‘কমেডিয়ান’ জেলেনস্কি। কারণ ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করবেন। ক্ষমতায় এসে উদ্যোগও নেন কিন্তু সেই আলোচনার কোথাও নেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। অর্থাৎ তাকে ছাড়াই চলছে যুদ্ধবিরতি আর শান্তি আলোচনা।
এতেই যেন মাথা খারাপ অবস্থা কিয়েভের। হয়তো মাথা চুলকিয়ে জেলেনস্কি পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখেন- হাজার হাজার সেনা, বেসামরিক নাগরিকের প্রাণহানি আর শত শত স্থাপনা ধ্বংসের চিত্র। সেই সঙ্গে ভূখণ্ড হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা-তো রয়েছেই। যুদ্ধের এমন পরিস্থিতিতে উল্টো ইউক্রেনের কাছে খনিজ সম্পদ চেয়ে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সবকিছু মিলিয়ে দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা তার।
ট্রাম্প এখন বলছেন, বাইডেন যা পাগলামি করার করে গেছেন সেই সব হিসাব বাদ। ইউক্রেনে অত্যাধুনিক সব অস্ত্র আর কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢালার এখন আর কোনো যুক্তিই খুঁজে পাচ্ছেন না । ফলে এই ‘লস প্রোজেক্টে’ ট্রাম্প নেই। কিন্তু ঠিক এই আমেরিকাই তাকে ন্যাটোতে নেওয়ার মুলা ঝুলিয়ে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছিল পুতিনের বিরুদ্ধে।
হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-জেলেনস্কির তুমুল তর্ক-বিতর্কের চিত্র দেখে মুচকি হাসছে রাশিয়া। বাহবা দিচ্ছে ট্রাম্পকে। বাধ্য হয়ে ইউক্রেন এখন ইউরোপের সহায়তা চাচ্ছে। প্রস্তাব দিয়েছে ন্যাটোকে পাশ কাটিয়ে পৃথক বাহিনী গঠন করার। কিন্তু জেলেনস্কিকে ফ্যান্স-জার্মানির মতো দাপুটে দেশ গোনায় ধরবে কি না সেটাই বড় প্রশ্ন।